ব্রণ যখন দুশ্চিন্তার কারণ

0 316

Acne problem and relief

কোথাও দাওয়াত আছে? অথবা বন্ধুদের সাথে অনেকদিন পর দেখা হবে।সুন্দর করে সেজেছেন ঠিকই কিন্তু ব্রণের কারণে আপনাকে দেখতে বাজে দেখাচ্ছে। মুখভর্তি ব্রণ নিয়ে অনেকেরই মন খারাপ থাকে। একটি সেরে উঠে তো পাশে আরেকটি দেখা যায়। কোনোটা পেকে এমন হয় যেন এক্ষুনি ফেটে পুঁজ বেরোবে। আবার ব্রণ খোঁটাও মানা, এতে নাকি দাগ স্থায়ী ভাবে বসে যাবে। কিন্তু আয়না দেখে খোঁটার জন্য হাত নিশপিশ করে। এ জীবনে বুঝি এ সমস্যা আর যাবেনা, এমনভাবে কেউ কেউ হয়তো হাল ই ছেড়া দেয়।

ব্রণ হয় কেন ও কিভাবেঃ-
বয়ঃসন্ধির সময় সাধারণত ব্র্ণের সমস্যাটি বেশি দেখা যায়। ২০-২২ বছর বয়স পর্যন্ত এ সমস্যায় অনেকে ভোগে। মুখেই ব্রণ হয় সব থেকে বেশি। তবে পিঠ, বুক ও হাতের উপরিভাগে হওয়া বিচিত্র নয়। ত্বকের তেলগ্রন্থি বা সেবিয়াস গ্রন্থির অতিকার্যকারিতার কারণে যদি অতিমাত্রায় তৈলাক্ত সেবাম তৈরি হতে থাকে, তবে তা একসময় গ্রন্থের মুখ বন্ধ করে দেয়। কখনো গ্রন্থি ফেটে গিয়ে প্রদাহ হয় ও গোটা হয়ে ফুলে উঠে। হরমোনজনিত তারতাম্য ও ব্রণের জন্য দায়ী।

ব্ল্যাকহেড, হোয়াইট হেডঃ-
ব্রণ বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। যে ব্রণ গুলোর মুখ কালো সেগুলো ব্ল্যাকহেড। আবার সাদা মুখ বা লাল (প্রদাহজনিত) মুখের ব্রণ ও হতে পারে। ব্রণে কখনো কখনো ব্যথা হতে পারে, পুঁজ হতে পারে এমনকি মাঝেমধ্যে গোটা থেকে সাদা ময়লার মত বেরোতে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরে কালো দাগ ও ক্ষত হয়ে যায়।

ব্রণ নিয়ে নানা মিথঃ-
অনেকেই মনে করে খাবারের সঙ্গে ব্রণের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু সত্য এটাই যে খাবারের সঙ্গে ব্রণের কোন সম্পর্ক নেই। তৈলাক্ত খাবার খেলেই যে ব্রণ হবে এমন কোন কথা নেই। তবে মোটা হয়ে যাওয়ার সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে কেননা এটি হরমোনজনিত হতে পারে।

ব্রণ হলে বারবার মুখে ফেসওয়াশ বা স্ক্রাবার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে,  এ ধারণাও ভুল। বরং বেশি বেশি এভাবে ধুলে ত্বকের স্বাভাবিক তেল হারিয়ে প্রদাহ বেশি হতে পারে। মুখ মোছার তোয়ালে বা কাপড় সব সময় পরিচ্ছন্ন হতে হবে।

এটা ঠিক যে ব্রণ খোঁটানো উচিত না এতে জীবাণু আরো ছড়াবে ও প্রদাহ বাড়বে।

ব্রণের চিকিৎসা আছেঃ-
ব্রণের চিকিৎসা প্রতিনিয়ত আধুনিক থেকে আধুনিকতর হচ্ছে।  চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্রণের প্রকার, আনুষঙ্গিক জটিলতা, রোগীর বয়স এবং সময়কাল বিবেচনা করা হয়। প্রথমত চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরণের ক্রিম, যেমনঃ- ইরাইথ্রোমাসিন, ক্লিনডামাইসিন, এজিলিক অ্যাসিড, টেন্টনয়েন, বেনজাইল পার অক্সাইড ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। কাজ না হলে বা রোগ তীব্র হলে এর পাশাপাশি মুখে খাবার ওষুধ ও, যেমনঃ- এজিথ্রোমাইসিন, ডক্সিস্লাইকিন, ক্লিন ডামাইসিন ইত্যাদি দেওয়া হয়। কখনো এরপর ও ব্রণ হতে থাকে বা কখনো বড় গোটা বা ফোঁড়ার মত দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর হলো আইসো টেট্রিনয়েন ক্যাপসুল। তবে এটি ব্যবহারে কিছু সতর্কতা জরুরি এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই ব্যবহারযোগ্য নয়। হরমোন জনিত সমস্যায় অ্যান্টিএন্ড্রোজেন দিয়েও চিকিৎসা করা হয়।

এছাড়া ব্রণ চিকিৎসায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারও বেড়েছে। বিশেষ করে ব্রণ-পরবর্তী ক্ষত সারাই করতে এগুলো কার্যকর। যেমনঃ- মাইক্রোনিডলিং, মাইকোডার্মাব্রেশন, লেজার ইত্যাদি।

মনে রাখবেন ব্রণের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি ও এতে ধৈর্যের প্রয়োজন। আধাআধি চিকিৎসা করে ছেড়ে দিবেন না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.