ভাসানচরের যাত্রায় ১৫ শ রোহিঙ্গা শরনার্থী

0 137

গত মঙ্গলবার ভোরে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ছেড়েছে পর পর পাঁচটি জাহাজ। নোয়খালির ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে জাহাজগুলো। মিয়ানমার থেকে আসা শরনার্থীদের চোখে মুখে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে কৌতূহল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সবাই। এই শরনার্থী বহরে রয়েছে ছোট ছোট শিশুরাও। নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড, র‌্যাব এবং নৌ পুলিশের কড়া নজরদারিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক জাহাজে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ভাসানচরে।

এর আগে সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে দুই দফায় ৩০টি বাসে  কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার জন্য দ্বিতীয় দফায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে আনা হয়। পতেঙ্গার বিএফ শাহীন কলেজ মাঠে তাদের রাতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) অলক বিশ্বাস জানান, কক্সবাজার থেকে দুই দফায় ১ হাজার ৮০৪ রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছেন। গত মঙ্গলবার সকালে পতেঙ্গা বোট ক্লাব থেকে তাদের নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে জাহাজ ছেড়ে যায়।

বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরনার্থীদেরকে পর্যায়ক্রমে ভাসানচরে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় থাকা ১২ লাখ রোহিঙ্গা  মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। প্রাথমিকভাবে সেখান থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় সরকার।

এই উদ্যোগের আওতায় চলতি বছরের মে মাসে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করে ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় গত ৪ ডিসেম্বর আরও এক হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয় ভাসারচরে।

বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার সাথে রয়েছে- শিশুদের খেলার মাঠ, স্কুল, চিকিৎসা কেন্দ্র, দ্বীপে কর্মরত দেশি-বিদেশি সংস্থার লোকজনের জন্য থাকার আলাদা  আলাদা ভবন।

এসব সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি ভাসানচরে দূর্যোগ মোকাবেলায় তৈরী করা হয়েছে ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৯ ফুট উঁচু বাঁধ এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ভবন ও জেটি ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.