নেইমারের গোলে এগিয়ে ব্রাজিল

0 176

অনলাইন ডেস্ক:

অতিরিক্ত সময়ে এসে গোল করে এসে গোল পেল ব্রাজিল। ম্যাচের ১০৫তম মিনিটে গোল করে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন নেইমার। সেই সঙ্গে ব্রাজিলের হয়ে পেলের সমান গোলের রেকর্ডে ভাগ বসান তিনি। জাতীয় দল ব্রাজিলের হয়ে ফুটবল কিংবদন্তি পেলের করা ৭৭ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন নেইমার।

দ্বিতীয়ার্ধেও কোনো গোল হলো না। প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলেছে ব্রাজিল। গোলের অসংখ্য সুযোগ তৈরিও করেছিল। কিন্তু গোলটিই প্রবেশ করাতে পারেনি ক্রোয়েশিয়ার জালে।

ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক ডোমিনিট লিভাকোভিক যেন ব্রাজিলিয়ানদের সামনে হিমালয় পাহাড়ের ন্যায় দাঁড়িয়ে গেছেন। ব্রাজিলের অনেকগুলো আক্রমণ ডিফেন্ডারদের ফাঁক গলতে পারলেও গিয়ে থেমে যায় গোলরক্ষকের সামনে।

আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে ম্যাচটা উপভোগ্যই হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গোলের খেলা ফুটবলে গোলই যদি না হয়, তাহলে সেখানে আর কোনো আনন্দ কিংবা মজা নেই। ব্রাজিল এবং ক্রোয়েশিয়া প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে দুর্দান্ত প্রথমার্ধ শেষ হলেও কেউ গোল করতে পারেনি। অথচ, দু’দলই গোলের অনেক সুযোগ পেয়েছিলো।

তবে পুরো ম্যাচে উভয় দলই ফাউলের ছড়াছড়ি দেখেছে। দু’দল মিলে করেছে ২৬টি ফাউল। ব্রাজিলের ১২ আর ক্রোয়েশিয়ার ১৪টি।

২০ বছর ধরে নকআউট পর্বে ইউরোপীয়ান কোনও দলকে হারাতে না পারার শঙ্কাই যেন প্রথমার্ধে ব্রাজিলকে ধরে বসে। শেষ ষোলোর ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ৩৬ মিনিটেই ৪ গোল আদায় করে নেয়া ব্রাজিলকে এদিন ছন্দে দেখা যায়নি। অথচ, দু’দলই গোলের অনেক সুযোগ পেয়েছিলো।

ক্রোয়েশিয়া নিজেদের অর্ধে ডিফেন্স করেছে সুযোগ পেলে কাউন্টার অ্যাটাকে গিয়েছে। দুই একটি গোলের সুযোগও করেছিল। ক্রোয়েশিয়া রক্ষণাত্মক খেলায় তাদের অর্ধে ব্রাজিল খেলেছে বেশি। এতে মাঝে মধ্যে বক্সের আশেপাশে ফাউলও হয়েছে। সেই ফাউল থেকে নেইমরাররা গোল আদায় করতে পারেননি।

দ্রুত গতির কাউন্টার অ্যাটাকে ক্রোয়েশিয়ানদের ঠেকাতে গিয়ে ব্রাজিলও ফাউল করেছে। ক্রোয়াট অধিনায়ক মদ্রিচের নেয়া বক্সের একটু বাইরে থেকে নেয়া শট অবশ্য ব্রাজিল শিবিরে ভীতির সঞ্চার করতে পারেনি। প্রথমার্ধে দুই দলই একটি করে হলুদ কার্ড দেখেছে যদিও ইনজুরি সময় দেয়া হয় মাত্র ১ মিনিট।

ম্যাচের ১৩তম মিনিটেই গোলের দারুণ সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। দুর্দান্ত কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে ডান পাশ থেকে জুরানোভিচ বল এগিয়ে দিলে ছোট বক্সের ভেতর দিয়ে বল যাওয়ার সময় তাতে পা লাগানোর চেষ্টা করেন প্যালাসিচ এবং পেরিসিচ। কিন্তু কেউ বলে পা লাগাতে পারেননি। গোলও হয়নি। বেঁচে যায় ব্রাজিল।

২০ মিনিটে বল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন ভিনিসিয়াস। নেইমারের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান করে বল নিয়ে শট করেন ক্রোয়েশিয়ার জালে। কিন্তু ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে যায়। ফিরতি বলে আবারও নেইমার তিন-চারজনকে কাটিয়ে শট নেন। যদিও ছিল দুর্বল শট। গোলরক্ষকের কাছে বল।

২২ মিনিটে ক্যাসেমিরোর দুর্দান্ত শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা হয়। ৪০ মিনিটে বক্সের বাম পাশে রিচার্লিসনকে ফাউল করা হলে ফ্রি-কিক দেয়া হয়। কিক নেন নেইমার। অসাধারণ এক কিক নেন নেইমার। কিন্তু বল ধরে ফেলেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক।

বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচের ৫১ মিনিটে দারুণ সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। লুকা মদ্রিচের বাড়িয়ে দেয়া বলে লাফিয়ে উঠে হেড নিয়েছিলেন ইভান প্যারিসিচ। কিন্তু সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫৫ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু সেটি ধরে ফেলেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ।

ম্যাচের ৬৪তম মিনিটে এবারের আসরে এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত খেলা ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে তুলে রদ্রিগোকে মাঠে নামান কোচ তিতে। ৬৬তম মিনিটে লুকাস পাকুয়েতা বল নিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন। তার সামনে ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। পাকুয়েতাকে মারতে দেখে সামনে এগিয়ে যান তিনি। পাকুয়েতা বুকে মেরে দিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন।

৮০ মিনিটে আরও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন পাকুয়েতা। রদ্রিগের বাড়িয়ে দেয়া বল বক্সের মধ্যে পেয়ে শট নেন পাকুয়েতা। কিন্তু সেটি ধরে ফেলেন ক্রোশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। ম্যাচের ৮৪তম মিনিটে রিচার্লিসনকে উঠিয়ে পেদ্রোকে নামান তিতে। ৮৬তম মিনিটেও দারুণ এক সুযোগ নষ্ট হয় ব্রাজিলের। কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করে ক্রোয়েশিয়ান ডিফেন্ডার।

তিতে ৯০ মিনিটের মধ্যে তিনজন খেলোয়াড় পরিবর্তন করলেও ম্যাচের ফল পরিবর্তন করতে সক্ষম হননি। অন্য দিকে মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়া জমাট রক্ষণ করে মাঝে মধ্যে ব্রাজিলের অর্ধে গিয়েছিল। সেই আক্রমণগুলো খুব জোরালো ছিল না। কোনো দল গোল করতে না পারায় ম্যাচটি অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে গড়াচ্ছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.