বাঁশখালীতে জমি দখল নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১৩

0 148

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর খানখানাবাদ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান বদরুদ্দিন ও জসিম হায়দার নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ১৩ জন।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় এই ঘটনা ঘটে।

আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।আহতরা হলেন- আবুল হোসেন (৬৫), নবী হোসেন (৫০), নেজাম উদ্দিন (৪০), জাহাঙ্গীর আলম (৩৮), মিজানুর রহমান (৩০), জহির অহম্মদ (৪১), ইউসুফ (৩০), আবু তালেব (৭০), নাজিম উদ্দীন (৫৭), আব্দুর শুক্কুর (৫০). মো.আনোয়ার কবীর (৪৬), রোকন উদ্দীন (২৮) ও তারেক সুলতান (২০)।

বাড়ির মালিক নবী হোসেনের এক আত্মীয় জানান, গতকাল আশ্রয়ণ প্রকল্পে কাজের অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তার ওপর হামলা হয়েছে। তিনি এখন আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাঁশখালীর খানখানাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসীম হায়দার এ বিষয়ে বলেন, গতকাল বুধবার আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে যান ইঞ্জিনিয়ার। এসময় প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা নিন্মমানের কাজের অভিযোগ করেন ইঞ্জিনিয়ারকে। এতে প্রকল্পের সাপ্লায়ার ইউসুফ ও আলমগীর ক্ষিপ্ত হন। এ নিয়ে আজ সকালে তারা সদলবলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাজারে আগে থেকে অবস্থান নেন। সকাল সাড়ে ৮টায় অভিযোগকারীরা বাজারে আসলে তাদের ওপর হামলা চালোনো হয়। এ সময় স্থানীয়রা সেটা প্রতিহত করার চেষ্টা করে।

বাঁশখালীর খানখানাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদরুদ্দীন চৌধুরী বলেন, কাজটি উপজেলা প্রশাসন করছে। এখানে উপজেলা প্রশাসন প্রতিদিনি কাজ দেখাশোনা করেন। চেয়ারম্যান হিসেবে আমিও দেখাশোনা করি। সংঘর্ষের বিষয়টি শুনেছি। আসলে ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ে বাঁশখালীতে ঘরবাড়ি যখন ভেঙে যায় তখন কিছু লোক ওই জায়গায় ঘরবাড়ি করে বসবাস শুরু করে। ঘরবাড়িগুলো অকেজো হয়ে পড়লে সরকার সেখানে তাদের ঘরবাড়ি করে দেয়া শুরু করে। এখানে মাটি ভরাট করে সমান করতে গিয়ে এটা নিয়ে নানা কথা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে ইউসুফ এবং নবী হোসেনের সাথে তর্কাতর্কি শুরু হয়। আজ সকালে বাজারে চা খেতে গেলে ইউসুফকে নজরুল অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ নিয়ে সংঘাতে সৃষ্টি হয়। এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে কোন সমস্যা হয়নি। জসিম হায়দার অতিরিক্ত রঙ মেখে বিষয়টি ঘোলাটে করছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আমি ঘটনাস্থল থেকে ঘুরে এসেছি। এটা ওদের ব্যক্তিগত সমস্যা। দুটি গ্রুপ নিজেদের মধ্যে মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে। গতকাল আমাদের ইঞ্জিনিয়ার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সে সময় পাশে একজন বলল সমুদ্রের বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। ওদের দুই পক্ষ বাইরে গিয়ে মারামারি করেছে।

দুই পক্ষ কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা চেয়ারম্যান গ্রুপ ও একটা জসিম গ্রুপ। তবে আমি এটা নিশ্চিত না। আজ সকালে এক গ্রুপ গিয়ে বলল এটা সমুদ্রের বালি কে বলেছে? এটা নিয়ে আজ মারামারি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ জায়গায় আগে কুঁড়েঘর ছিল। আমরা ওদেরকেই পুনর্বাসন করে দিচ্ছি। এখানে মোট ৩০টি ঘর হবে। সংঘর্ষের ঘটনাও প্রকল্পের বাইরে ঘটেছে। বর্তমান শ্রমিকদের সরিয়ে নেওয়া হবে। কাল থেকে নতুন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হবে। মোট কথা প্রকল্প নিয়ে কোন দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.