টি-টোয়েন্টিতে আফগানদের গুঁটিয়ে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়

0 209

দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে ৬১ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টাইগার দেওয়া ১৫৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ৯৪ রানেই গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান। টি-টোয়েন্টির সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে টানা আট ম্যাচে হারের পর অবশেষে জয়ের মুখ দেখল বাংলাদেশ।

আজ বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমেই বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা। ৫ ওভারে মাত্র ২৫ রানে দুই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার ও নাইম শেখের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে সেট হওয়ার আগেই আউট হন সাকিব আল হাসান। ৬ বলে মাত্র ৫ রান করে ফেরেন সাকিব। সাকিবের মতো একই অবস্থা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। তিনি ৭ বলে ১০ রানে ফেরেন।

১০.৫ ওভারে ৮০ রানে মুনিম, নাঈম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার পর আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা লিটন দাস। পঞ্চম উইকেটে লিটন-আফিফ যোগ করেন ৩৮ বলে ৪৬ রান। এরপর মাত্র ১৮ বলের ব্যবধানে ৪ উইকেট পতনের কারণে ১৫৫/৮ রানে ইনিংস গুটায় বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর।

টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ৪৭তম ম্যাচে ৪৪ বলে চার বাউন্ডারি আর দুটি ছক্কার সাহায্যে দলীয় সর্বোচ্চ ৬০ রান করে ফেরেন লিটন দাস। লিটন আউট হওয়ার মাত্র এক বল ব্যবধানে ২৪ বলে ২৫ রান করে ফেরেন আফিফ। টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমে ৮ রানে আউট হয়ে ফেরেন ইয়াসির আলী। তার মতো রানআউট হয়ে ফেরেন মেহেদি হাসানও।

১৫৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে নাসুম আহমেদের অফ স্পিনে বিভ্রান্ত হয় আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। প্রথম ওভারেই উইকেট শিকার করেন নাসুম। প্রথম ওভারে মাত্র ১ রান খরচ করে শিকার করেন রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে মাত্র ৩ বলে কোনো রান না দিয়ে শিকার করেন দুই উইকেট। তার শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন হজরতউল্লাহ জাজাই ও দারউইশ রসুল। সেই ওভারে ১ রানে নেন দুই উইকেট।

পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এসে তৃতীয় বলে করিম জানাতকে সাজঘরে ফেরান নাসুম আহমেদ। ৩ ওভারে মাত্র ৭ রান খরচ করে আফগান টপঅর্ডার ৪ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠান নাসুম আহমেদ।

চতুর্থ ওভারে পেস বোলার মোস্তাফিজুর রহমান অবশ্য উইকেট শিকারের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু উইকেটকিপার লিটন দাস ক্যাচটি লুফে নিতে পারেননি। বলটি তার গ্লাভসে লাগায় লাইফ পান নজিবুল্লাহ জাদরান। নাসুমের পর আফগান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। ১১তম ওভারে সাকিবের করা পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ডিপ কাভারে আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নবি।

দলীয় ৫৭ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে নজিবুল্লাহর সঙ্গে গড়েন ৩৭ রানের জুটি। ১৬ রান করে ফেরেন নবি। এরপর হাত খুলে খেলতে থাকা নজিবুল্লাহকে মুনিম শাহরিয়ারের ক্যাচে পরিনত করেন সাকিব। দলীয় ৬৬ রানে ফেরার আগে ২৬ বলে ২৭ রান করেন নজিবুল্লাহ।

অলরাউন্ডার রশিদ খানকে উইকেটে সেট হওয়ার সুযোগ দেননি তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। তার বলে ইয়াসির আলীর হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে মাত্র ১ রান করার সুযোগ পান রশিদ খান।

১৮ বলে ২০ রান করা আজমতউল্লাহকে আউট করেন মোস্তাফিজুর রহমান। কায়েস আহমেদের পর মুজিব উর রহমানকে আউট করে আফগানদের ১৭.৪ ওভারে ৯৪ রানে প্যাকেট করে দেন তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৫/৮ (মুনিম ১৭, নাঈম ২, লিটন ৬০, সাকিব ৫, মাহমুদউল্লাহ ১০, আফিফ ২৫, ইয়াসির ৮, মেহেদি , নাসুম ৩*; ফারুকি ৪-০-২৭-২, মুজিব ৩-০-২৪-০, রশিদ ৪-০-১৫-১, নবি ২-০-১৯-০, কাইস ২-০-২১-১, ওমরজাই ৪-০-৩১-২, করিম ১-০-৫-০)।

আফগানিস্তান: ১৭.৪ ওভারে ৯৪ (জাজাই ৬, গুরবাজ ০, রাসুলি ২, নাজিবউল্লাহ ২৭, করিম ৬, নবি ১৬, ওমরজাই ২০, রশিদ ১, কাইস ৮, মুজিব ৪, ফারুকি ০*; নাসুম ৪-০-১০-৪, মেহেদি ৩-০-১৭-০, মুস্তাফিজ ৩-০-১৯-১, শরিফুল ৩৪.-০-২৯-৩, সাকিব ৪-০-১৮-২)।

Leave A Reply

Your email address will not be published.