পদ্মার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা

0 115

অনলাইন ডেস্কঃ

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে বর্ষার শেষ মুহূর্তে পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতে উত্তাল ঢেউ আর প্রবল স্রোতের কারণে ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে পদ্মা নদী ঘেঁষা উপজেলার আশপাশের গ্রাম ও বসতভিটা।

গত ১ সপ্তাহে লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া গ্রামে ইতোমধ্যে ১৫টি বসতভিটা বিলীন হয়েছে। অনেকে সরে গেছেন নিরাপদ স্থানে। সর্বনাশা পদ্মার ছোবলে প্রতিবছরই আঘাত হানছে আড়াই লাখ জনসংখ্যার বসবাসরত এই উপজেলার মানচিত্রে। দিনে দিনে ছোট থেকে ছোট হচ্ছে লৌহজংয়ের মানচিত্র।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক মাস যাবত লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া গ্রামে কমবেশি ভাঙছে তবে সপ্তাহ খানেক যাবত তিব্র গতিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। দিনে-রাতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু বহনকারী বাল্কহেড চলাচলে উত্তাল ঢেউয়ের কারণে এসব এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।

সোমবার (৩ অক্টোবর) সকালে মিঠু মোল্লার চার শ’ বছরের পুরনো ভিটেবাড়ি পদ্মার গর্ভে চলে যায়। পরে তড়িঘড়ি করে ঘরটি ভেঙে অন্য স্থানে সরিয়ে রাখা হয়। এছাড়া মামুন মোল্লা, মুকুল মোল্লা, কুতুব মোল্লা, হোসেন মোল্লা, তাজুল শিকদার, জাহাঙ্গীর শিকদার, ইউনুছ মোল্লা, রাকিব মোল্লার বসতঘর সরিয়ে নেয়া হয়েছে। টেউটিয়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড বড় নওপাড়া গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কখন পদ্মায় গিলে খায় সে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদীর পাড়ের মানুষজন।

এলাকাবাসী জানান, এর আগে ৫০ হাজার টাকার বাঁশ-খুঁটি ও বালুভর্তি ব্যাগ ফেলে ভাঙন থেকে বাড়িঘর রক্ষার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।

এর আগে চলতি বছরের ১৮ মে উপজেলার শামুরবাড়ি ও হাড়িদিয়া গ্রামে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। বাঁধ নির্মাণ নিয়ে উপজেলাবাসীদের মধ্যে যখন আনন্দের বন্যা বইছে, ঠিক তখনই হঠাৎ নদী ভাঙন দেখা দেয়ায় আবার হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা।

খবর পেয়ে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আব্দুল আউয়াল। তিনি দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে থেকে দ্রুত ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছি।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, লৌহজং উপজেলার খড়িয়া থেকে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার দিঘিরপাড় পর্যন্ত পদ্মার বাম তীর ৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার এলাকায় চার শ’ ৪৬ কোটি টাকার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, খড়িয়া থেকে দিঘিরপাড় পর্যন্ত এলাকার দূরত্ব ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ হলেও শুধু ভাঙন প্রবণ ৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু টেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া গ্রামের ভাঙনকবলিত এলাকাটি ভাঙন প্রবণ হিসেবে চিহ্নিত না। তবে ভাঙন রোধে আজ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.