গবেষণা ছাড়া উৎকর্ষ সাধন সম্ভব নয় : প্রধানমন্ত্রী

0 219

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো স্বাস্থ্য খাতে গবেষণা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, গবেষণা ছাড়া আসলে উৎকর্ষ সাধন সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের গবেষণা এখনো আমাদের অপ্রতুল। গবেষণা ছাড়া কখনো উৎকর্ষতা সাধন করা যায় না।’

আজ বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নবনির্মিত ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল’ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসকবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা, গবেষণা কার্যক্রমের গুণগত মানোন্নয়নের নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আপনারা এখন যেটুকু করছেন সে জন্য ধন্যবাদ জানাই। তবে গবেষণার ওপর আরো গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের গবেষণা এখনো আমাদের অপ্রতুল।

তিনি বলেন, আমাদের যারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন তাদের শুধুমাত্র চিকিৎসা দিলেই চলবে না। সাথে সাথে তাদের কিন্তু গবেষণা করাও জরুরি। কাজেই এই বিষয়ে আমি অনুরোধ করবো যাতে আপনারা বিষয়টির প্রতি বিশেষভাবে নজর দেন।

সরকার প্রধান এ সময় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে প্রফেসর এমিরেটাস নিয়োগ দেয়ায় বিএসএমএমইউ’র কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে বলেন, ‘আপনাদের প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করবেন আপনাদের কাছে সেই আহবানই জানাই।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সাইফুল হাসান বাদল এবং বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জেং কিউন। বিএসএমএমইইউ’র ভিসি অধ্যাপক ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ স্বাগত বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল এবং বিএসএমএমইউ’র সার্বিক কর্মকাণ্ড বিষয়ে পৃথক দুটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

প্রায় চার একর জমির ওপর মোট এক হাজার ৫৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল এক হাজার কোটি টাকা প্রদান করেছে। সরকার বরাদ্দ করেছে ৩৩০ কোটি টাকা এবং বিএসএমএমইউ ১৭০ কোটি টাকা দিয়েছে।

অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং আধুনিক অপারেশন থিয়েটারসহ, হাসপাতালটি যেকোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসক দ্বারা রেফার করা সমস্ত গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করবে। প্রায় পাঁচ থেকে আট হাজার রোগী হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবা পাবেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ৭৫০ শয্যা থাকবে। এছাড়াও ১৪টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, একটি এক শ’ শয্যার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, একটি এক শ’ শয্যার জরুরি ইউনিট, ছয়টি ভিভিআইপি এবং ২২টি ভিআইপি কেবিন এবং ২৫টি ডিলাক্স কেবিন থাকবে।

বিশেষায়িত পরিষেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপন, জিন থেরাপি এবং রোবোটিক সার্জারি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় ডাক্তারদের শহরকেন্দ্রিক না থেকে উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে স্বাস্থ্য সেবাকে তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ারও আহবান জানান। পাশাপাশি অনলাইনে চিকিৎসা সেবাও জোরদার করার পরামর্শ দেন।

তিনি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির প্রতি দৃষ্টি দেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, সেবার মান যাতে বাড়ে সে জন্যও ব্যবস্থা নিতে হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.