চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় শখের গাড়িতেই প্রাণ গেল

0 167

রিজভী সাকিব। অনেকদিন ধরে পাঠাও-এ রাইড শেয়ারিংয়ে গাড়ি চালিয়ে এবং সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল সেট বিক্রি করে টাকা জমিয়েছেন। সে টাকায় দেড় মাস আগে কেনেন নীল রঙের কার। আজ সেই শখের গাড়িতে প্রাণ গেল তার।

সকালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আধুনগরে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান সাকিবসহ পাঁচ জন। সাকিব নগরীর কোতোয়ালি থানার ফারুক হাসানের ছেলে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি মেঝো।

আজ সোমবার (২১ মার্চ) নিজের টাকায় দেড় মাস আগে কেনা গাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন সাকিব। কিন্তু কক্সবাজার আর যাওয়া হল না।

ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আধুনগরে ট্রাক ও প্রাইভেট কারের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- রিজভী সাকিব (২৪) হারুনুর রশিদ (৩০), সাইদুল (৩৩) ও সাদমান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ট্রাক ও প্রাইভেট কারের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়।’

dhaka post

সাকিবের বাবা ফারুক হাসান বলেন, ‘কিছুদিন আগে মহসিন কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করেন সাকিব। সামনে এমএবিতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’

গত রবিবার (২০ মার্চ) রাতে ছেলের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে বলে জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, ‘রাতে আমি একটি মিটিংয়ে ছিলাম। এমন সময় ছেলে ফোন করে বিকাশে টাকা চেয়েছিল। ওই সময় আমার কাছে তেমন টাকা না থাকায় যা ছিল তাই দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, বাসায় পৌঁছে টাকা দিব। তারপর আর কোনো কথা হয়নি। সকালে আমার ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনি।’ গাড়িতে বাকিদের সাথে তাদের পরিচয় নেই বলে জানান ফারুক।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাইভেট কারটি সাকিবের। সে নিজে পাঠাও চালাতো, সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল বিক্রি করত। এভাবে টাকা জমিয়ে দেড় মাস আগে কারটা কিনেছিল। গাড়িটি সে নিজেই চালাত। অনেক শখ করে গাড়িটি কেনে। সেই গাড়িতেই মারা গেল আমার ছেলে। এই কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সাকিবের বাবা ফারুক হাসান।’

রিজভী সাকিবের মরদেহ বাড়িতে আনতে ঘটনাস্থলে যান তার ভাই ও চাচা। ফারুক হাসানসহ স্বজনরা অপেক্ষা করছেন বাড়িতে শেষ বারের মতো ছেলের মুখ দেখতে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.