শীতে সর্দি-কাঁশি থেকে বাঁচার উপায়

0 164

শীতে বাতাস ভারী থাকে বিধায় বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বাতাসের নীচের স্তরে নেমে আসে। এর ফলে মানুষের শরীরে দ্রুতই ভাইরাস প্রবেশ করে এবং ভাইরাসজনিত রোগ হয়। ছোট বা বয়স্করা যাদের ইমিউনিটি ক্ষমতা কম তারা সহজে এইসব রোগে আক্রান্ত হন।

শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যাও শীতে বেশ বাড়ে। এইসব রোগ থেকে বাঁচতে কিছু করণীয়-

  • আদা, লেবু, মধু দিয়ে আরও একটি পানীয় তৈরি করা যেতে পারে। মাঝে মাঝে খেলে কাঁশি কমবে, সাথে বাড়বে প্রতিরোধ শক্তিও। রোজ দুইবার এই পানীয় গরম করে খেলে ঠান্ডার সমস্যা দূর হতে পারে।
  • হলুদ মেশানো দুধও অত্যন্ত উপকারী। হলুদের অ্যান্টি-ব্যাক্টিরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণ আছে। এই পানীয় সর্দি-কাঁশি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
  • বেসনের সাথে দুধ, ঘি, হলুদ আর গোলমরিচ দিয়ে তৈরি মিশ্রণ সর্দি-কাঁশি হলে খাওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে আদাও দেয়া যায়। চা খাওয়ার অভ্যাস না থাকলেও আদা কুচি করে রাখা যায়। কাঁশি হলেই কয়েক কুচি আদা মুখে দিলে সাথে সাথে গলায় আরাম মিলবে। কয়েক টুকরো আদা পানিতে ফুটিয়ে তা মাঝে মাঝে খেলেও ভালো লাগবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৫টি নিয়ম মানলে সর্দি-কাশি আপনার ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না। জেনে নিন উপায়গুলো:

  • প্রচুর ভিটামিন ডি
    গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ভিটামিন ডির অভাব হয়, তাদের সর্দি-কাশিতে কাবু করে বেশি। অনেক সময় শুধু খাবার থেকে যথেষ্ট ভিটামিন ডি পাওয়া যায় না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত। এর বাইরে কিছুটা সময় সূর্যের আলোতে থাকা লাগতে পারে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টার মধ্যে সপ্তাহে দুই দিন কেউ যদি অন্তত ৫ থেকে ৩০ মিনিট সূর্যালোক গায়ে মাখে, তবে তা যথেষ্ট।
  • হাত পরিষ্কার রাখুন
    আপনি অনেক সময় মুখে হাত দেন। ২০১৬ সালে করা এক গবেষণায় দেখা যায়, একজন ব্যক্তি প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ১৬ বার মুখে হাত দেন। মুখে হাত দেওয়ার পাশাপাশি হাতে অনেক জিনিস ধরা হয়। এতে হাত থেকে মুখে সহজেই ভাইরাস যেতে পারে। সেখান থেকে মুখে বা শরীরে ভাইরাস যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। তাই পরিষ্কার করে হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ। কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান ব্যবহার করে নিয়মিত হাত ধুয়ে নেবেন। তাহলে ঠান্ডা লাগা কমবে।
  • ফোন পরিষ্কার রাখুন
    এখন প্রায় সবার হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে গেছে। একবার চিন্তা করে দেখুন, আপনার ফোন কোথায় কোথায় রাখেন। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা যায়, টয়লেট সিটের চেয়ে ১০ গুণ বেশি জীবাণু থাকে মোবাইল ফোনে। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, স্মার্টফোনের পর্দায় থাকা এসব জীবাণু ত্বকের রোগসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এসব জীবাণু থেকে সর্দি-কাশি হতে পারে। তাই মোবাইল ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।
  • জিংক গ্রহণ করুন
    শরীরে জিংকের ঘাটতি হলে ভাইরাসের বৃদ্ধি দ্রুত হয়। তাই শরীরে জিংকের ঘাটতি হতে দেবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে জিংক ট্যাব খেতে পারেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ মো. শরিফুল ইসলামের ভাষ্য, আমাদের শরীরে তিন শর বেশি এনজাইমের সঠিক পরিচালনের জন্য জিংক বা দস্তার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। প্রতিদিন আমাদের শরীরের জন্য ১৫ মিলিগ্রাম জিংকের প্রয়োজন হয়। গরু ও ভেড়ার মাংসে উচ্চমাত্রায় জিংক রয়েছে। সামুদ্রিক মাছ, গরু-খাসির কলিজা, আটা-ময়দার রুটি, দুগ্ধজাত খাদ্য, শিমজাতীয় উদ্ভিদ, মসুর ডাল, চীনাবাদাম, মাশরুম, সয়াবিন ও ঝিনুকে জিংক পাওয়া যায়।
Leave A Reply

Your email address will not be published.