এক ব্রিটিশ নারী সেনার যৌনকর্মী হয়ে ওঠার করুণ গল্প!

0 490

গ্রেস পার্কার, ৩৫ বছর বয়সী সাবেক এই নারী কমান্ডার কাজ করেছেন ইরাক ও আফগানিস্তানে। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হয়ে মধ্যপ্রাচ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে গিয়ে একাধিকবার প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। সামনে থেকে দেখেছেন বোমা হামলা, লাখো মানুষের মৃত্যু। অথচ ২০১৯ সালে অব্যাহতি পেয়ে অবসরে যান তিনি। আঘাত পরবর্তী চাপজনিত ব্যাধি বা পিটিএসডিতে ভুগছিলেন তিনি। সেইসাথে রয়েছে তীব্র হতাশা এবং ভয়। দুটো ভয়াবহ যুদ্ধে রয়াল ইঞ্জিনিয়ার্সে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেও শেষপর্যন্ত নিজের সাহসিকতা ধরে রাখতে পারেননি। রয়াল ইঞ্জিনিয়ার্সে তার মতো সুনাম অর্জনকারী নারীর সংখ্যা খু্বই কম।

গ্রেস পার্কারের মা রয়াল এয়াফোর্সে কর্মরত ছিলেন অন্যদিকে বাবা এবং তিন ভাই ছিলেন সেনাবাহিনীতে। পারিবারিক ধারাবাহিকতায় মাত্র ১৯ বছর বয়সে গ্রেস যোগদান করেন। শিক্ষানবিশ হিসেবে পিরব্রাইটে সেরা রিক্রুট নির্বাচিত হয়ে গ্রেস জার্মানিতে সিগন্যালার হিসেবে ৫ বছর কাটান। ২০০৯ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধ প্রকৌশলী হিসেবে ৬ মাস কাজ করেন তিনি। তখন সন্ত্রাসিদের হামলার শিকার হন তিনি এবং তার সহকর্মীরা। ২০১৫ সালে ২২তম ইঞ্জিনিয়ারিং রেজিমেন্টের হয়ে ইরাকে যান গ্রেস। সেখানেও নিজের কাজের জন্য ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। যদিও ইরাক যুদ্ধ থেকে ফেরার পর মানসিকভাবে অসুস্থ হতে থাকেন গ্রেস পার্কার। ২০১৯ সালে অব্যাহতি পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। পিটিএসডি এবং হতাশার চিকিৎসা শুরু করেন তিনি। কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়ে ঘরছাড়া হয়ে শেফিল্ডের এক হোস্টেলে উঠেন গ্রেস। তারপর নিজেই জীবনের গতিপথ পাল্টে ফেলেন। একই সময় নিয়মিত চিকিৎসা চালিয়ে যান। অর্থাভাবে হোস্টেলে থেকেই শুরু করেন পতিতাবৃত্তি। এই প্রসঙ্গে গ্রেস বলেন, “আমার অর্থের প্রয়োজন ছিল এবং পতিতাবৃত্তি ছিল সবথেকে সহজ উপায়। আমি ডেটিং সাইটে ঢুকতাম এবং লোকজন আমাকে প্রস্তাব দিত। আমার যেহেতু অর্থের প্রয়োজন ছিল আমি নিষেধ করতাম না। এর জন্য আমি কাউকে দায়ী করি না। এটি সম্পূর্ণ আমার নিজের ব্যক্তিগত পছন্দ ছিল।”

১৪ বছর সফলভাবে সেনাবাহিনীতে কাজ করা গ্রেস পার্কার বর্তমানে পেশা হিসেবে পতিতাবৃত্তি বেছে নিয়েছেন ঠিকই, তবে নিজের পুনর্বাসন সঠিকভাবে না হওয়ায় দুষছেন সেনাবাহিনীকে। শুধু তিনি একা নন, যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং ক্ষয়ক্ষতি দেখে পরিবর্তী জীবনে নানানরকম সমস্যার সম্মুখীন হওয়া সেনা সদস্যদের সঠিকভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় না বলেও অভিযোগ তোলেন গ্রেস। এই প্রসঙ্গে গ্রেস বলেন, ‘সেনাবাহিনী আমাকে অব্যাহতি দিয়ে তাদের জায়গা থেকে ভালো করলেও সেটা আমার জন্য মঙ্গলজনক হয়নি। যখন আমাকে ছুটি দেয়া হয় তখন আমি সেনাবাহিনীর প্রতি তিক্ত ছিলাম। সেনাবাহিনীতে থাকলে হয়তো আমার চিকিৎসা যেভাবে চলছিল তা আরো ভালোভাবে সম্পন্ন হতো। এখন আমার চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন ব্যাহত হচ্ছে।’

Leave A Reply

Your email address will not be published.