হিজাব বিতর্ক: বিশ্বের যেসব দেশে হিজাব নিষিদ্ধ!

0 126

হিজাব বিতর্ক এখন ভারতসহ উপমহাদেশে বেশ সরব হয়েছে। সাম্প্রতিকালে দক্ষিণ ভারতের কর্নাটক রাজ্যে ড্রেস কোড চালু করে স্থানীয় শিক্ষা বিভাগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে কর্নাটকের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ড্রেস কোডের কারণে হিজাব পরিহিত মুসলিম মেয়েদের কলেজে ঢুকতে দেয়নি প্রতিষ্ঠান প্রশাসন। এই ধরণের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই প্রজ্ঞাপন ভারতের সংবিধান পরিপন্থী দাবি করে হাইকোর্টে ২টি পিটিশন জারি করে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা। এই ঝামেলার মধ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি মুসকান খান নামক ছাত্রীর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যাতে দেখা গেছে যে তিনি হিজাব পরে তার স্কুটি পার্ক করে ক্লাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু বেশ কিছু মানুষ তাকে অনুসরণ করছেন। দেখা যায়, গেরুয়া রঙের স্কার্ফ পরিহিত একদল ব্যক্তি ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগানে ছাত্রীটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর চিৎকার করছে। মুসকান খান তখন ভিড়ের দিকে ফিরে দু’হাত তুলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। এই ঘটনা এবং ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি পুরো দেশেই আলোচনার ঝড় তুলেছে।

ছবি: সংগৃহীত

মুসকানের প্রতিবাদের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ভারতের অনেক জায়গায় ড্রেস কোড বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। মুসলিম শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে ইতোমধ্যেই কর্নাটকের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কর্নাটকের বিজেপি পন্থী শিক্ষামন্ত্রীও মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব নিষিদ্ধ করার বিষয়টিকে সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দেন। এরপর আর বিষয়টি শুধুমাত্র ভারতের অভ্যন্তরীণ বিতর্কে সীমাবদ্ধ থাকেনি। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশসমূহের সংবাদমাধ্যমে বেশ সমালোচিত হয়েছে কর্নাটকের এই ঘটনাটি। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি মানুষকে তার পোশাকের স্বাধীনতা দেয়ার পরেও শুধু সংখ্যালঘু মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব নিষিদ্ধ করার বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য এসেছে আল জাজিরাসহ বেশ কিছু ইসলাম পন্থী সংবাদমাধ্যমে। বহিঃবিশ্বে যখন ভারতের এত এত সমালোচনা তখন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ব্যস্ত পশ্চিমা বিশ্বে হিজাব, নেকাব নিষিদ্ধ করার খবর প্রচারে। ভারতের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মুসলমান যা সংখ্যায় ২০৪ মিলিয়ন। ভারতের জনসংখ্যার হিসেবে কম মনে হলেও বৈশ্বিক হিসেবে এই সংখ্যাটি অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। ভারত তথা ক্ষমতাসীন বিজেপি বরাবরই সাম্প্রদায়িক সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচিত। এবারও তারা আরো একটি সাম্প্রদায়িক উষ্কানি দিয়ে সংখ্যালঘুদের হেনস্তা করল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অভিযোগ পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ হিজাব নিষিদ্ধ করেছে। আজ আমরা দেখব কোন কোন দেশ, কী কী কারণে হিজাব নিষিদ্ধ করেছে।

সুইজারল্যান্ড

পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, সর্বশেষ বোরকা, নেকাব এবং হিজাব নিষিদ্ধ করা দেশ সুইজারল্যান্ড। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশটি ২০২১ সালের মার্চ মাসে গণভোটের মধ্যদিয়ে জনসম্মুখে নেকাব, হিজাব এবং বোরকা নিষিদ্ধ করে। মুসলিম নারীদের পোশাক প্রসঙ্গে গণভোট কমিটির চেয়ারম্যান এবং সুইস পিপলস পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য ওয়াল্টার ওবম্যান তখন বলেছিলেন, ‘সুইজারল্যান্ডে আমাদের ঐতিহ্য হলো আপনি আপনার মুখমণ্ডল দেখাবেন। এটা আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক।’

ছবি: সংগৃহীত

মূলত দেশটির উগ্র ডানপন্থী শিবির থেকেই মুসলিম নারীদের পর্দার বিষয়ে প্রথম আপত্তি উঠে। আর এই আপত্তি সাম্প্রতিক ঘটনা নয়। এর আগে ২০০৪ সালে মুসলিমরা সুইস জাতীয় সম্প্রদায়ের অংশ কিনা সে বিষয়ে গণভোটের দাবি জানায় ডানপন্থীরা। যদিও এই দাবিটি সেবার জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করে সাধারণ ভোটাররা। অতঃপর ২০০৯ সালে মুসলমানদের ইবাদাতের স্থান মসজিদ নিষিদ্ধের জন্য গণভোটের আয়োজন করে দেশটি। সুইস সরকারের ভাষ্যমতে, মসজিদগুলো মুসলমানদের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান যা দেশটির আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সেবার গণভোটে ৫৭.৫ শতাংশ মানুষ মুসলমানদের ইবাদাতের স্থানগুলো বন্ধ করে দেয়ার পক্ষে মতামত দেন। গণভোটের মধ্যদিয়ে সে সময় সুইজারল্যান্ড ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রথম দেশ হিসেবে মসজিদ বন্ধ করে দেয়ার তকমা অর্জন করে। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৩৮ শতাংশ রোমান ক্যাথলিক এবং ২৭% প্রতিবাদী নাস্তিক।

ফ্রান্স

২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ফ্রান্সে জনসম্মুখে নেকাব, হিজাব এবং বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়। যদি কোনো মুসলিম মহিলা জনসম্মুখে নিষিদ্ধ এসব পোশাক পরিধান করলে ১৫০ ইউরো জরিমানার গুনতে হবে। ২০১৬ সালে ফ্রেঞ্চ রিভেরার মেয়র কর্তৃক মুসলিম অ্যাথলেটদের বিশেষ পোশাক বুরকিনি নিষিদ্ধ করার খবরে বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। মুসলিম নারী অ্যাথলেটরা এই ধরনের পোশাকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যায় ফ্রেঞ্চ মুসলিম নারীরা। পরবর্তীতে দেশটির শীর্ষ আদালত বিষয়টিকে ‘মৌলিক স্বাধীনতা লঙ্ঘন’ উল্লেখ করে প্রত্যাহার করে নেয়।

ছবি: সংগৃহীত

বেলজিয়াম এবং রাশিয়া

২০১১ সালে এক প্রশাসনিক আইনের মাধ্যমে নেকাব, হিজাব এবং বোরকা নিষিদ্ধ করে বেলজিয়াম। যদিও বেলজিয়ান সংসদের নিম্ন কক্ষে ২০১০ সালেই পাস হয়েছিল এই সংক্রান্ত আইন। সংসদ সদস্যদের অনেকে মনে করেন বোরকা বা নেকাবের মতো পুরো মুখে পর্দা করা নারীদের নিপীড়নের প্রতীক। যে সকল মুসলিম নারী এই আইন অমান্য করবেন তাদের ৭ দিনের জেল এবং ১৩৭.৫ ইউরো জরিমানা গুনতে হবে। যদিও দুজন মুসলিম নারী সে সময় সাংবিধানিক আদালতে গিয়েছিলেন এই আইন বাতিলের জন্য। কিন্তু শেষপর্যন্ত আইনটি কার্যকর করে বেলজিয়াম সরকার।

ছবি: সংগৃহীত

পুরো রাশিয়ায় এখন অবধি হিজাব, নেকাব নিষিদ্ধ না হলেও দেশটির সীমান্তবর্তী স্ট্যাভ্রোপল রাজ্যে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের এক আদেশের মধ্য দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেকাব, হিজাব নিষিদ্ধ করে তারা। অতঃপর ২০১৫ সালে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে রিপাবলিক অব মোর্দোভিয়ার বিদ্যালগুলোতে নেকাব, হিজাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস

২০১৭ সালে জার্মানির পার্লামেন্টে নেকাব, বোরকা, হিজাব নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। যদিও এটি সর্বসাধারণের জন্য নয়। শুধু যারা সিভিল সার্ভিস, আদালত এবং সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করে তাদের জন্যই এই আইনটি করেছিল জার্মান পার্লামেন্ট। যদিও ধীরে ধীরে সরকারি অফিস, স্কুল, নির্বাচন অফিসসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানের কর্মরত মুসলিম নারীদেরও নেকাব, হিজাব নিষিদ্ধ করে দেশটি। পরবর্তীতে একে একে ৮টি রাজ্যের ৬টিতেই শিক্ষকদেরও হিজাব বা স্কার্ফ নিষিদ্ধ করা হয়।
২০১৮ সালের জুন মাসে নেদারল্যান্ডসের পার্লামেন্ট উচ্চ কক্ষে নেকাব, হিজাব এবং বোরকা নিষিদ্ধ করণ আইন পাস হয়। জনসম্মুখে, পাবলিক বাস, ট্রেনে, স্কুল কিংবা হাসপাতালে নারীরা নিষিদ্ধ হওয়া এসব পোশাক পরিধান করলে জেল জরিমানা গুনতে হয় দেশটিতে।

ছবি: সংগৃহীত

শ্রীলংকা

২০১৯ সালে স্টার সানডেতে ভয়াবহ আত্মঘাতি বোমা হামলা হয়েছিল শ্রীলংকায়। এর পেছনে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠি জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে দেশটি। ২৫ জন অপরাধী ইতোমধ্যেই বিচারাধীন রয়েছেন। ২১ এপ্রিলের হামলায় ২৭০ জন নিহত হন, আহত হন আরো অনেকে। এই হামলার জের ধরে ২০২১ সালের এপ্রিলে, দেশটির ক্যাবিনেটে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়। শুধুই বোরকা নিষিদ্ধ করে ক্ষান্ত হয়নি শ্রীলংকান ক্যাবিনেট। একই সাথে তারা নেকাব এবং হিজাবও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। দেশটিতে মোট জনসংখ্যার ৯.৭% মানুষ মুসলিম যারা সংখ্যালঘু হিসেবে সেখানে বসবাস করছেন।

চীন

বিগত কয়েক বছর যাবত চীনের মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য উইঘুরে নির্যাতনের ব্যাপক সংবাদ উঠে এসেছে সংবাদপত্রে। চীনে মুসলমানদের ইতিহাস প্রায় ১৪০০ বছরের পুরনো। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে এক সময় মোট জনসংখ্যার ২.৮৫ শতাংশ ছিল মুসলিম যা এখন ১.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। যাইহোক, চীনের কম্যুনিস্ট সরকার ২০১৭ সালে এক আইন জারি করে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে নারীদের বিমানবন্দর, রেলওয়ে স্টেশনসহ বেশ কিছু জায়গায় নারীদের বোরকা, নেকাব এবং হিজাব নিষিদ্ধ করে। জিনজিয়ানের উইঘুরে যে ১০ মিলিয়ন বাসিন্দা থাকে তাদের কয়েক দশক যাবত নির্যাতন করে আসছে চীনের কম্যুনিস্টরা। শুধু চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের জেরে এর বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রতিবাদ জানায়নি পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশকিছু দেশ।

ছবি: সংগৃহীত

বোরকা, নেকাব ও হিজাব নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন কী বলে?

উল্লেখিত দেশসমূহ বিশেষ আইনের মাধ্যমে মুসলিম নারীদের বোরকা, নেকাব, হিজাব নিষিদ্ধ করেছে সম্প্রতি। তবে আরো কিছু দেশ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এসব পোশাক নিষিদ্ধ করলেও বৃহৎ পরিসরে নিষিদ্ধ করেনি। এখন দেখা যাক মুক্ত পৃৃথিবীতে ধর্মভিত্তিক বৈষম্য সামনে এনে পোশাক নিষিদ্ধ করার পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের আইন কী বলে। নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকারের জন্য প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক চুক্তি (ICCPR) এর ১৮ অনুচ্ছেদের অধীনে ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি নিশ্চিত করেছে যে, ICCPR চুক্তির অধীনে ‘ধর্ম ও বিশ্বাস অনুশীলন, পালন করা শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক কাজ নয়। বরং স্বতন্ত্র পোশাক বা মাথা ঢেকে রাখার মতো বিষয়গুলোও স্বাধীনতার অংশ হতে পারে।’ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি আরও বলে যে, ১৮তম অনুচ্ছেদটি প্রাতিষ্ঠানিক বৈশিষ্ট্যের সাথে ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যের ব্যাখা হতে পারে না। এর ব্যাখা হতে হবে ব্যাপকভাবে। অনুচ্ছেদের ১৮(৩) এর অধীনে, ধর্মের স্বাধীনতার উপর যে কোনো সীমাবদ্ধতা বা আইন হতে হবে বৈষম্যহীন। এখানে অবশ্যই জননিরাপত্তা, শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য ও নৈতিকতা, অন্যান্য মানুষদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় এবং আনুপাতিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘ আইন নিশ্চিত করে যে, বোরকায় নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, কারণ এটি নিজের ধর্ম বিশ্বাস এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার গ্যারান্টি দেয়। এছাড়াও ইউরোপীয় কনভেনশন অব হিউমেন রাইটসের অনুচ্ছেদ ৯ এ স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, প্রত্যেকের চিন্তা, বিবেক এবং ধর্মের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিটি বরাবরই জানিয়েছে বোরকা, নেকাব, হিজাব নিষিদ্ধ করার বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এবং তারা এটিকে বৈষম্যমূলক মনে করে। কিন্তু পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বোরকা, নেকাব, হিজাব নিষিদ্ধ করে মুসলিম নারীদের মানবাধিকার এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার পরেও জাতিসংঘের নীরব ভূমিকা সত্যিই হতাশ করে। অন্ততপক্ষে এটা নিশ্চিত যে, ভবিষ্যতে সংখ্যালঘু হিসেবে বসবাসরত মুসলিম নারীদের বাধ্য করা হবে ধর্মীয় বিধিনিষেধ ত্যাগ করতে। কারণ জাতিসংঘের মাপকাঠি এখন আর মুসলিম নারীদের অধিকারের জন্য নড়ে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.