করোনা পরবর্তী জটিল রোগ এমআইএসে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা


করোনা পরবর্তী রোগ মাল্টিসিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম বা এমআইএসে আক্রান্ত শিশুদের শনাক্তের হার বাড়ছে বাংলাদেশে। চলতি বছরের এপ্রিলে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্তের পর মে মাসেই বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় রোগটি। এই রোগে কিডনি, হার্ট, লিভারসহ একাধিক অঙ্গ একসঙ্গে আক্রান্ত হওয়ায় শিশুদের মৃত্যুঝুকিঁ বেশি থাকে। তবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু করতে পারলে রোগীদের সহজেই সুস্থ জীবনে ফেরানো সম্ভব বলে মত চিকিৎসকদের।

সম্প্রতি ঢাকা শিশু হাসপাতালে বিরল রোগ এমআইএস-সি এর লক্ষণ নিয়ে ৩টি শিশু ভর্তি হয়েছে। একজন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরলেও দুজন এখনো চিকিৎসাধীন। যথাসময়ে চিকিৎসা শুরু করে শিশুকে আশঙ্কামুক্ত করতে পারায় আনন্দিত অভিভাবকরা।

একজন শিশুর বাবা বলেন, ১০৫ ডিগ্রি জ্বর ছিল। কিছু খেলেই বমি করে ফেলে দিত।

টানা ৫দিন মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, অস্বাভাবিক দুর্বলতা, পেটে ব্যথাসহ শরীরে র‌্যাশ উঠলে শিশুকে বাড়িতে না রাখার পরামর্শ চিকিৎসকদের। শরীরের একাধিক অঙ্গ একসঙ্গে আক্রান্ত হওয়ায় আইসিইউ সুবিধা সম্বলিত বড় হাসপাতালে শিশুকে নিয়ে আসার আহ্বান তাদের।

শিশু কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শিরীন বলেন, যত তাড়াতাড়ি শিশুকে নিয়ে আসবেন তত তাড়াতাড়ি শিশুকে সুস্থ করা সম্ভব।

ঢাকা শিশু হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. সফি বলেন, যেহেতু এতে হার্টে সমস্যা বেশি হয়, হার্টের ইকোটা ভাল করে করতে হবে।

ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালে ত্রিশের বেশী শিশু শনাক্ত হলেও ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া একটি শিশুকে সুস্থ করতে দ্বিতীয় ধাপের চিকিৎসা দিতে হয়েছে। তাই এই সব রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও অভিভাবকদের নিশ্চিন্ত হবার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন শিশু বিশেষজ্ঞ।

অধ্যাপক ডা. সাঈদা আনোয়ার বলেন, ফলোআপ এই রোগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় শিরাগুলোতে সংকুচিত হয়ে যায়, রক্ত চলাচল কমে যায়। এতে মৃত্যুও হতে পারে।

তবে চলমান বাস্তবতায় এই রোগ শনাক্ত বা নিয়ন্ত্রণে আইইডিসিআর এখনো মনোযোগ দিতে পারেনি বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।

আইইডিসিআর পরিচালক ডা. তাহমিনা শারমিন বলেন, আমরা রিসার্চ করে কার্যক্রমগুলো করছি। এই মুহুর্তে কিছু করছি না এই বিষয়ে।

বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ২১ বছরের নিচের শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে এই রোগে। কোভিডের সাধারণ লক্ষণ শ্বাসকষ্ট বা কাশি ছাড়াও অনেক শিশু জটিলতায় পড়ছে। তাই রোগ দ্রুত শনাক্তে অভিভাবক ও চিকিৎসকদের মধ্যে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান বিশেষজ্ঞদের।

Comments (0)
Add Comment