অবিস্মরণীয় জয়: মাহমুদুল্লাহর ছক্কায় ফাইনালে বাংলাদেশ

কলম্বো: বাংলাদেশের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬০ রান। নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সামনে একই সমীকরণ। জিতলে ফাইনাল, হারলে বিদায়। ফাইনালে উঠতে হলে এ ম্যাচটা জিততেই হতো বাংলাদেশকে।

শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ। এমন সুসংবাদ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। ফিরেছেন নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ফিরে আসার ম্যাচে টসটাও জিতে নিয়েছেন তিনি। বেছে নিয়েছেন ফিল্ডিং। টস জিতেই শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক।

প্রথমে ব্যাট করে পাওয়ার প্লেতে নেই ৪ উইকেট। দলীয় ৪১ রানে হারায় ৫ উইকেট। সাকিব-মোস্তাফিজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিতই দিচ্ছিলো। কিন্তু শুরুর চাপ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় টাইগার বোলাররা। আটকে রাখতে পারেনি শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের। ষষ্ঠ উইকেটে কুশল পেরেরা ও অধিনায়ক থিসারা পেরেরার ৯৭ রানের জুটিতে লড়াকু সংগ্রহই গড়েছে স্বাগতিকরা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান তুলে নিয়েছে দলটি। ফলে ফাইনালে যেতে টাইগারদের লক্ষ্য ১৬০ রান।

 

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শুক্রবার টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে শ্রীলঙ্কা। শুরুতেই টাইগারদের বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে দারুণ চাপে পরে দলটি। ৪৮ দিন পর মাঠে ফিরে ইনিংসের শুরু করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে উইকেট পান নিজের দ্বিতীয় ওভারে। দানুশকা গুনাথিলাকাকে লং অনে সাব্বিরের রহমানের তালুবন্দি করেন সাকিব। পরের ওভারে আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। ভয়ংকর ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিসকে ফেরান কাটার মাস্টার। মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ ধরতে কোন ভুল করেন সৌম্য সরকার।

এক ওভার পর আবার বোলিং করতে এসে লঙ্কান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। প্রথমটি রানঅউটের সুবাদে। মিরাজের কাছ থেকে বল পেয়ে ঝাপিয়ে পরে উইকেট ভেঙে আউট করেন উপুল থারাঙ্গাকে। এর এক বল পরে শিকার করে দাসুন সানাকাকে। মোস্তাফিজের অফকাটার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীমের হাতে। এরপর দলীয় ৪১ রানে লঙ্কান শিবিরে আবার আঘাত হানেন টাইগাররা। এবার মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ক্যাচ ধরেছেন সেই মোস্তাফিজ। মিরাজের বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন জিবন মেন্ডিস। তবে ঠিকভাবে করতে না পারায় বল চলে শর্ট ফাইন লেগে দাঁড়ানো মোস্তাফিজের হাতে।

৪১ রানে প্রথম সারীর পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েও চাপে রাখতে পারেনি টাইগাররা। অধিনায়ক থিসারা পেরেরাকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন কুশল পেরেরা। তাদের ৯৭ রানের জুটিতে ভর করেই ১৫৯ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কুশল পেরেরা এদিনও তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। টুর্নামেন্টের চার ম্যাচে এটা তার তৃতীয় ফিফটি। লঙ্কানদের ইনিংস মেরামত করে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ৪০ বল মোকাবেলা করে ৭টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান এ ব্যাটসম্যান। থিসারা পেরেরাও তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। খেলেন ৫৮ রানের ইনিংস। ৩৭ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি।

প্রথম দুই ওভারে দারুণ বোলিং করলেও শেষ দুই ওভারে ভীষণ খরুচে ছিলেন মোস্তাফিজ। শেষ দুই ওভারে ৩৫ রান দিয়েছেন তিনি। শেষপর্যন্ত ৩৯ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান কাটার মাস্টার। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন রুবেল, সৌম্য, সাকিব ও মিরাজ। তবে এদিন দলে বিশেষজ্ঞ বোলার হিসেবে দলে থাকলেও নাজমুল ইসলাম অপুকে কোনো ওভার করাননি সাকিব।

শেষ ওভারে এসে শ্রীলঙ্কার পক্ষেই ছিলেন আম্পায়ার। পরপর দুটি নিশ্চিত ওয়াইড বল যখন তার চোখ এড়িয়ে গেলো তখন এমনই মনে হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দমিয়ে রাখতে পারেনি টাইগারদের। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদুল্লাহর অসাধারণ এক ছক্কায় ২ উইকেটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ ও ভারত। ১৮ বলে ৪৩ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন ও নাজমুল ইসলাম।

শ্রীলঙ্কা দল: থিসারা পেরেরা (অধিনায়ক), দানুশকা গুনাথিলাকা, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, উপুল থারাঙ্গা, দাসুন শানাকা, ইশুরু উদানা, জিবন মেন্ডিস, আকিলা ধনঞ্জয়া, আমিলা আপনসো, নুয়ান প্রদিপ।

Bangladesh at Finalmahmudullah riyadmahmudullah riyad bring Bangladesh to final with his sixsrilanka vs bangladesh 2018
Comments (0)
Add Comment