প্রয়োজনে ‘শাটডাউন’ যে কোনো এলাকা: তথ্যমন্ত্রী

0 191


নভেল করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে বাঁচাতে পরিস্থিতি বিবেচনা করে যে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজন হলে দেশের যে কোনো এলাকা ‘শাটডাউন’ করা হবে বলে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে দেশের টেলিভিশন ও নাট্যাঙ্গণ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি একথা বলেন।

বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন দেশে কোথাও জরুরি অবস্থা বা লকডাউন করা হয়েছে, বাংলাদেশে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি ওই জবাব দেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “অবস্থার প্রেক্ষিতে যে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এই মুহূর্তে কোথাও শাটডাউন করা বা এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রয়োজন হলে সেটি যে কোনো জায়গায় হতে পারে।”

মন্ত্রীর এই কথার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় সব ধরনের দোকান পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় গণপরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বিদেশ থেকে অনেক বাংলাদেশির ফিরে আসার কথা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, “যেমন অনেক জায়গায় দেখা গেছে প্রচুর প্রবাসী চলে এসেছে। নির্দিষ্ট কিছু স্থানে শত শত হাজার ছাড়িয়ে এমনও আছে তারা সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

“তাদের মধ্যে কারও থাকলে ঘুরে বেড়ালে সংক্রমণ হবে, এ সমস্ত ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে। তবে এই সিদ্ধান্ত আজ একনেকে হয়নি।”

নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব না ছাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “একটি গুজব ছড়ানো হয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতালের চারজন ডাক্তার আক্রান্ত হয়েছে।

”এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে সরকার আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

সভায় কভিড-১৯ সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে কারণে বিভিন্ন কার্যক্রম স্থগিত করতে নেওয়া উদ্যোগের কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ”বোম্বে ও কলকাতায় শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও দেশগুলো নিজেদের মুক্ত রাখতে পারেনি।

”আমাদের দেশে সরকারের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এক কোটি মানুষ বিদেশে থাকে, ইউরোপে করোনাভাইরাস ব্যাপকতা লাভ করার পর প্রবাসীরা আসলে তাদের মাধ্যমে দেশে করোনাভাইরাস এসেছে।”

তিনি বলেন, “দেশকে মুক্ত রাখার জন্য নানা পদক্ষেপ ও নির্দেশনা দেওয়ার পরও অনেক প্রবাসী তা না মানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস যাতে আরও ছড়িয়ে না পরে সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।”

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “অন্যান্য যে জনসমাগম হয় এসব সীমিত করা প্রয়োজন দেশকে দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার জন্য। দেশকে রক্ষা করার জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।”

সবাইকে এই পরিস্থিতিতে নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “কোনো প্রবাসী বিশেষ করে ইউরোপ থেকে এসেছেন তারা সরকারের আদেশ মানছেন না। দেশকে রক্ষা করার জন্য পরিবারের স্বার্থে সকলকে এ নির্দেশনা মেনে চলা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্যানিক সৃষ্টি করার কোনো কারণ নেই।”

সভায় নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, “ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে কয়েক হাজার কর্মী কাজ করছে। শুটিং বন্ধ করে দিলে টেলিভিশনের স্বাভাবিক অনুষ্ঠানমালা বিঘ্ন হবে।

“মিডিয়াতে প্রচুর সংখ্যক কর্মী আছে যারা দিন আনে দিন খায় মতো অবস্থা, তাদের কথা বিবেচনায় আনতে হবে।”

তিনি বলেন, “আমাদের সিদ্ধান্ত ১৩টি সংগঠনের সাথে বসে নেব কবে থেকে কর্ম বিরতিতে যাব। ২২ তারিখ থেকে ৩১ মার্চ থেকে কর্ম বিরতিতে যাব যদি সব সংগঠন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসে।”

Leave A Reply

Your email address will not be published.