যে ঘড়িতে কখনও ১২টা বাজে না!

0 172

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুইজারল্যান্ড। পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ বলা হয় একে। দেশটি বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে অন্যতম কাঙ্খিত গন্তব্য। তবে শুধু বেড়ানোর জন্যই নয়, সব বিচারেই দেশ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়েছে ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটি।

তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও এর আরো অনেক বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি বিখ্যাত। সত্যিই বিষয়টি অবাক করার মতোই। সুন্দর দেশ সুইজারল্যান্ডেরউত্তর পশ্চিম প্রান্তে একটি শহর রয়েছে যার নাম সোলোথার্ন। এই শহরটি পর্যটকদের কাছে বিশেষ কারণে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এখানে যারাই বেড়াতে আসেন সেই পর্যটকেরা কিছু সময়ের জন্য থমকে যান শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত টাউন স্কয়ারের সামনে থাকা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে।
ঘড়ি আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। দৈনন্দিন কাজে কমবেশি সবাই ঘড়ি ব্যবহার করেন এবং এর সঙ্গে পরিচিত। ঘড়ির সময় ১২টার কাটা থেকে শুরু হয়ে আবার ১২টাতেই এসে শেষ হয়। কিন্তু বিশ্বে এমন একটি ঘড়ি আছে যেটিতে কখনো ১২টাই বাজে না। পৃথিবীর সব ঘড়িতে যেখানে ১ থেকে ১২টি কাঁটা রয়েছে সেখানে এই ঘড়িতে আছে ১১টি কাঁটা। অর্থাৎ কখনও ১২টা বাজে না এই ঘড়িতে।

কারণ কি? উৎসুক হয়ে কাউকে জিজ্ঞেস করতেই মিলবে অবাক করা তথ্য। শুধু ঘড়ি নয়, এই শহরের অনেক কিছুতেই রয়েছে ১১ সংখ্যার আধিক্য। যেমন এই শহরে রয়েছে ১১টি জাদুঘর, ১১টি গির্জা, ১১১টি ঝরণাসহ আরও অনেক কিছু। কিন্তু ১১ কেন? কি বিশেষত্ব রয়েছে সংখ্যাটির।

এই উত্তর খুঁজতে ফিরে যেতে হবে হাজার বছর আগে যখন এই নগরীর গোড়াপত্তন হয়েছিল। একাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এই নগরীতে ইলভ নামে এক জার্মানের আগমন ঘটেছিল, যিনি এই নগর প্রতিষ্ঠায় অনেক পরিশ্রম করেছিলেন। তবে ওই সময় ইলভ সফল না হলেও সোলোথার্নবাসী তাকে ভোলেনি। তারা ইলভ স্মরণে তার নামের সাথে মিল রেখে শহরে ইলেভেন (১১) নামে কয়েকটি স্থাপনা তৈরি করে। সেই থেকে শুরু।

এরপর যত দিন গেছে এই শহরের সঙ্গে ১১ সংখ্যাটি জড়িয়ে গেছে কাকতালীয়ভাবে। ১২১৫ সালে যখন এই শহরে কাউন্সিলর নির্বাচন হয় তখন ১১ জনকে নির্বাচন করা হয়েছিল। ১৪৮১ সালে সোলোথার্ন সুইস কনফেডারেশনের ১১তম প্রদেশ হিসেবে যুক্ত হয়। ওই সময় ১১ জন শহর রক্ষাকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। এরপর পনেরো শতকের গোড়ার দিকে যখন শহরে সেইন্ট আরসু গির্জা নির্মাণ করা হয় তখন গির্জায় ১১টি দরোজা, ১১টি জানালা, এগারোটি রো, ১১টি ঘণ্টা, ১১ রকমের পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল। মোট কথা এই শহরবাসীর ১১ সংখ্যাটির প্রতি রয়েছে এক প্রাগৈতিহাসিক দুর্বলতা

Leave A Reply

Your email address will not be published.